নিউজ

মার্করামের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে সিরিজে টিকে থাকল দক্ষিণ আফ্রিকা

সিরিজে টিকে থাকতে জয়ের বিকল্প ছিল না দক্ষিণ আফ্রিকার। আর অস্ট্রেলিয়ার সামনে সুযোগ ছিল দুই ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ নিজেদের করে নেওয়ার। তবে প্রথম দুই ম্যাচ হেরে চাপে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকাই শেষ পর্যন্ত পেয়েছে ঘুরে দাঁড়ানো এক জয়। ব্যাটে-বলে নৈপুণ্য দেখিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে তারা হারিয়েছে ১১১ রানে। এ জয়ে ৫ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ব্যবধানটা এখন ২-১ করল প্রোটিয়ারা।

পচেফস্ট্রুমে এদিন টস জিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে আগে ব্যাট করতে পাঠায় অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক মিচেল মার্শ। সিদ্ধান্তটাকে ভুল প্রমাণ করে এইডেন মার্করামের সেঞ্চুরি এবং ডি-কক-বাভুমার ফিফটিতে দক্ষিণ আফ্রিকা সংগ্রহ করে ৬ উইকেটে ৩৩৮ রান। জবাবে আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান ডেভিড ওয়ার্নারের ঝড়ো ব্যাটিংয়ের পরও ৩৪.৩ ওভারে ২২৭ রানের বেশি করতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া।

বড় লক্ষ্যের জবাব দিতে নেমে অস্ট্রেলিয়াকে বিধ্বংসী শুরু এনে দেন ডেভিড ওয়ার্নার ও ট্রাভিস হেড। ২৪ বলে ৩৮ রান করে ট্রাভিস হেড ফিরে গেলেও, ওয়ার্নার ছিলেন আগ্রাসী। তাঁর সামনে পাত্তা পাচ্ছিল না দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা। মাত্র ২৭ বলেই পৌঁছে যান ফিফটিতে। মিচেল মার্শকে সঙ্গে নিয়ে দলকে ভালোই এগিয়ে নিচ্ছিলেন ওয়ার্নার। এ দুজন মিলে করেন ৪৩ বলে ৬১ রান।

মার্শকে (২৯) ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন তাব্রেইজ শামসি। এরপর দলীয় ১৫৭ রানে রানআউটের ফাঁদে পড়েন ওয়ার্নারও। মূলত ওয়ার্নারের আউটটিই বদলে দিয়েছে ম্যাচের গতিপথ। ফেরার আগে ৫৬ বলে ১০ চার ও ৩ ছয়ে ৭৮ রান করেন এ ওপেনার। ওয়ার্নারের বিদায়ের পর থিতু হতে পারেননি আর কোনো অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ধীরে ধীরে ম্যাচ থেকে ছিটকে যেতে থাকে তারা। একপর্যায়ে দলীয় ২০০ রানে অ্যালেক্স ক্যারিও ফিরে যাওয়ার পর হারটা ছিল কেবল সময়ের ব্যাপার। শেষ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া অলআউট হয় ২২৭ রানে। অস্ট্রেলিয়া যখন গুটিয়ে যায় তখনও তাদের হাতে বাকি ছিল ৯৩ বল। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ৫০ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন গেরাল্ড কোয়েতজে।

এদিন পচেফস্ট্রুমে আগে ব্যাট করতে নামা দক্ষিণ আফ্রিকাকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার কুইন্টন ডি কক ও তেম্বা বাভুমা। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে দুজন মিলে উদ্বোধনী জুটিতে সংগ্রহ করেন ১৩৭ বলে ১৪৬ রান। ৪৮ বলে ফিফটিতে পৌঁছে ঝড়ের গতি আরও বাড়িয়ে দেন ডি কক। শেষ পর্যন্ত ৭৭ বলে  ১০ চার ও ২ ছয়ে সাজানো ইনিংসটি থামে ৮২ রানে।

সঙ্গী হারিয়ে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তেম্বা বাভুমাও। ৬২ বলে ৫৭ রান করা বাভুমা ফেরেন তানভীর সাংহার শিকার হয়ে। ১৫০ রানের মাথায় দ্বিতীয় উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। এরপর সেখান থেকে নতুন আরেকটি জুটি গড়েন রিজা হেন্ড্রিক্স ও এইডেন মার্করাম। বিশেষ করে মার্করামের তাণ্ডবে রীতিমতো বেসামাল হয়ে পড়ে অস্ট্রেলিয়ান বোলিং। শুরুটা অবশ্য একটু ধীরেসুস্থেই করেছিলেন মার্করাম। ৪৯ বলে পৌঁছান ফিফটিতে। ততক্ষণে অবশ্য হেন্ড্রিক্স (৩৯) ও হেইনরিখ ক্লাসেন (০) ও ডেভিড মিলার (৮) ফিরে গেছেন সাজঘরে।

তবে একের পর এক সঙ্গী হারিয়ে হাল ছেড়ে না দিয়ে বরং আরও আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেন মার্করাম। জস হ্যাজলউডের করা ৪৫তম ওভারটিতে ২ ছয় ও ২ চারে নেন ২৩ রান। যেটি ওয়ানডেতে হ্যাজলউডের সবচেয়ে খরুচে ওভারও বটে। এর মধ্যে ঝড়ো গতিতে ১৬ বলে ৩২ রান করে আউট হন মার্কো ইয়ানসেন।

তবে অন্য প্রান্তে মার্করাম ছিলেন অবিচল। অপরাজিত থেকে ইনিংসের শেষ বলে আদায় করে নেন সেঞ্চুরিও। ৭৪ বলে ৯ চার ও ৪ ছয়ে ১০২ রান করেন এই প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান। শেষ পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকা থামে ৬ উইকেটে ৩৩৮ রানে। তবে শেষ ৩ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকা সংগ্রহ করে মাত্র ২৪ রান। নয়তো সংগ্রহটা আরও বড় হতে পারত। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে সর্বোচ্চ ৩৯ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন ট্রাভিস হেড।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button